চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির যুদ্ধ চলছে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত সীমান্তের এপারে শোনা গেছে গোলাগুলির বিকট শব্দ। এতে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের শঙ্কার পাশাপাশি আতঙ্ক বেড়েছে স্থানীয়দের মাঝে।
সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এবং সাবরাংয়ের পূর্বে নাফ নদীর ওপারে রাখাইনের মংডু শহরের অবস্থান। ওই এলাকায় প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীকে হটিয়ে ওই এলাকার অধিকাংশ স্থান দখলে নেয় আরাকান আর্মি। এসব জায়গা পুনরুদ্ধারে কয়েকদিন ধরে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে জান্তা সরকার। সেই গোলার শব্দেই কেঁপে উঠছে এপারের সীমান্ত।
টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দা ওমর ফারুক বলেন, গোলার শব্দে নির্ঘুম রাত কেটেছে। সকাল পর্যন্ত বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। রাত জেগে বসে ছিলাম। আমাদের নারী ও শিশুরা বেশি ভয়ে আছে।
সীমান্তের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, মিয়ানমারে এখনো কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। মংডুর যেখানে যুদ্ধ হচ্ছে, ওই এলাকাতেই অধিকাংশ রোহিঙ্গা নাগরিকের বসবাস। এভাবে যুদ্ধ চলতে থাকলে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে।
যদিও সীমান্তে অনুপ্রবেশে রোধে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর ইশতিয়াক মুরর্শেদ।
এদিকে খারাংখালী, টেকনাফ, পৌরসভা, হ্নীলা, জাদিমুড়া, দমদমিয়া, নাইট্যংপাড়া, পৌরসভার জালিয়াপাড়া, নাজিরপাড়া, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ, নাফ নদীর মোহনায় থেকে থেকে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেপেঁ উঠছে টেকনাফ সীমান্ত।
ক্যাম্পে বসবাসকারী এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, রাখাইনে কয়েকদিন ধরে যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে। ফলে ওই দেশে থাকা রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে, পালিয়ে আসার জন্য। কিন্তু তাদের এদেশে আসতে নিরুৎসাহিত করছি। তবু প্রাণভয়ে পালিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছে মানুষ।
অন্যদিকে, মংডু শহরেরও মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত নাফ নদী ও সীমান্ত সড়কে টহল বৃদ্ধি করেছে।
এ বিষয়ে সদ্য যোগদানকারী টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, আমিও গোলার বিকট শব্দ শুনেছি। মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে এ ধরনের বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। আমরা সীমান্তে বসবাসকারী মানুষের খোঁজ-খবর রাখছি। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আমাদের বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা সর্তক অবস্থানে রয়েছে।
চাটগাঁ নিউজ/ ইউডি