চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘাত, সংঘর্ষের ঘটনায় গণহারে গ্রেপ্তার ও আটকের ফলে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)।
আজ বুধবার (৩১ জুলাই) বাপার সভাপতি নুর মোহাম্মদ তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর কবির স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারকে বুঝতে হবে নিপীড়নের মাধ্যমে প্রকৃত সমাধান ও সমর্থন অর্জন করা যায় না। সেটা করতে হয় জনসপক্ষ, নীতিনিষ্ঠ ও কল্যাণমূলক আচরণ দ্বারা। এ দুঃসময়ে তরুণদের পাশে দাঁড়ানো এবং তরুণেরা যে রাজনৈতিক অবিচারের সম্মুখীন, তার বিরুদ্ধে কথা বলা বাপা নৈতিক দায় ও কর্তব্য বলে মনে করে।
বিবৃতিতে বলা হয়, কোটা সংস্কারের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে নিরসনের পরিবর্তে বলপ্রয়োগ করে মোকাবিলা করতে চাওয়ায় শিক্ষার্থী ও জনগণ ব্যাপক সংখ্যায় রাস্তায় নেমে আসে এবং এক সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মূলত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্বিচার গুলিবর্ষণের ফলে অনেক শিক্ষার্থীসহ দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয় ও অসংখ্য মানুষ আহত হন। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করে। মেট্রোরেলসহ বহু সরকারি স্থাপনা, ভবন, যানবাহন ও বেসরকারি সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। এসব ক্ষয়ক্ষতি যে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা করেননি, তার বড় প্রমাণ হলো এই আন্দোলনের মূল কেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার নিকটবর্তী মেট্রোরেল স্টেশনসহ কোনো স্থাপনা এবং যানবাহন হামলার শিকার হয়নি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকার শিক্ষার্থী ও অন্যদের মৃত্যু এবং আহত হওয়ার ঘটনায় একদিকে দুঃখপ্রকাশ করছে, অন্যদিকে ‘ব্লক রেইড’ (নির্দিষ্ট এলাকা অবরুদ্ধ করে অভিযান) করে শিক্ষার্থীদের গণহারে গ্রেপ্তার ও আটক করছে। বাপা শঙ্কিত যে এর ফলে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ আরও বাড়বে এবং দুই শতাধিক মৃত্যুতে ইতিমধ্যে যে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে, তার উপশম আরও কঠিন হবে।
বিবৃতিতে দেশে শান্তি, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার জন্য চার দফা দাবি জানানো হয়েছে। দাবিগুলো হলো—সংঘাতের সময়ের হত্যাকাণ্ড ও মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়া, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া এবং হলগুলোর ব্যবস্থাপনা ছাত্রসংগঠনের পরিবর্তে হল কর্তৃপক্ষের কাছে রাখা; হতাহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া; সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া যাতে, কোটাকে কেন্দ্র করে নতুন করে আর কোনো সংকট না আসে।
চাটগাঁ নিউজ/এআইকে