সেলিম উদ্দীন,ঈদগাঁও প্রতিনিধি: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী আল ফরমুজ লেচুমা করিম বালিকা দাখিল মাদরাসার ৮ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে বিয়ে দেওয়ার অভিযাগে উঠেছে। এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের দ্বারেদ্বারে ঘুরছেন ঐ ছাত্রীর হতভাগা পিতা।
গত শনিবার (১২ আগষ্ট) সকালে উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের সেগুন বাগিচা গ্রামে ঘটেছে এ ঘটনা। এ ঘটনায় ছাত্রীর পিতা জাফর আলম এক লিখিত আবেদনে চকরিয়া থানার ওসি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মেয়ের বাল্য বিবাহ বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী মাহিয়া আক্তারের জম্ম ২/২/২০০৯ সাল, মাত্র ১৪ বছর ৫ মাস ১৫ দিন। (মাদরাসার প্রত্যায়ন অনুসারে) পড়া লেখার তীব্র আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও মেয়েটিকে চাপসৃষ্টি করে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
অভিযোগ জানা গেছে, উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের সেগুন বাগিচা গ্রামের জাফর আলমের কন্যা মাহিয়া আক্তারকে গত ১২ আগষ্ট বাড়ী থেকে খুটাখালীতে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পথে জোর পুর্বক তুলে নিয়ে যায় একই এলাকার প্রবাসী শফি আলমের পুত্র মোঃ রাশেল (১৯)। পরিদন রাশেল তার বোন জামাই পাশ্ববর্তী ঈদগাঁও উপজেলার কলেজ গেইট এলাকার ফারুকের ঘরে আটকিয়ে রেখে বিয়ে দেয়ার জোর চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থায় সোমবার স্ট্যাম্পমুলে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়েছে।
মাহিয়ার পিতা জাফর আলম বলেন, আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে এখন বিয়ের নাটক সাজানো হচ্ছে। আমার পরিবারকে অনেক বোঝানোর পরও তার মা রাজী হচ্ছেনা। তিনি বলেন আমার দুশমন আছে, মেয়ে দেখতে বড় হয়েছে, তবে বয়স পরিপূর্ণ হয়নি। যার সাথে মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে সেই ছেলেটি গত শুক্রবার একই এলাকার আবদুল্লাহর স্ত্রী তিন সন্তানের জননীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িত হলে স্থানীয়রা তাকে হাতেনাতে ধরে বেঁধে রাখে। পরে বিচার শালিশীর মাধ্যমে আপোষ মিমাংসার কথা বলে আমার কন্যা মাহিয়াকে তুলে নিয়ে বিয়ের নাটক মঞ্চস্থ করে।
তিনি আরো বলেন, অনেক বোঝানোর পরেও ছেলের পরিবারকে রাজী করাতে না পেরে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি। এ ব্যাপারে পত্রিকায় লেখালেখি এবং একটি মানবাধিকার সংস্থার সাথে যোগাযোগ করেছি। বাধ্য হয়ে থানা পুলিশ ও ইউএনওর কাছে অভিযোগ দিয়েছি। এমনকি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে কক্সবাজারে মামলা প্রক্রিয়াধিন রয়েছে।
এদিকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের এ সংক্রান্ত একটি প্রত্যায়ন ও অভিযোগ পেয়েছেন স্বীকার করে চকরিয়া থানা পুলিশের এসআই ওমর ফারুক বলেন, ওই মাদ্রাসা ছাত্রীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে ওই ছাত্রী ও অভিযুক্তদের হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বর্তমানে ওই ছাত্রীকে নিয়ে রাশেল সেগুন বাগিচা গ্রামে অবস্থান করছেন। বিয়ে পাকাপোক্ত করতে মোটা অংকের টাকা খরচ করছেন। এ ব্যাপারে মুঠোফোনে ছেলেটির পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মোবাইল বন্ধ করে দেন।