চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি সংস্কার আন্দোলন আরো বেগবান করতে ১০টি দিক-নির্দেশনা ঘোষণা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
শনিবার (১৩ জুলাই) নিজের ফেসবুক আইডির একপোস্ট তিনি এ নির্দেশনা মেনে চলতে আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
নাহিদ ইসলাম তার ফেসবুক পোস্টে নির্দেশনা মেনে চলার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, যেভাবে আন্দোলন পরিচালনা করবেন—
১. বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, জেলা ও মহানগরে যারা আন্দোলন সমন্বয় করছেন সবাই সংগঠিত হওয়ার জন্য আলাদা করে সমন্বয়ক কমিটি তৈরি করুন। দল, মত নির্বিশেষে সকলের অংশগ্রহণের সুযোগ রাখুন। সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করুন এবং সবার আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন। তবে আন্দোলনের স্বার্থে বিতর্কিত বা রাজনৈতিকভাবে প্রশ্ন উঠতে পারে, এরকম কাউকে নেতৃত্ব পর্যায়ে রাখবেন না।
২. আন্দোলনকে কোনো একক বা মূল নেতৃত্বের ওপর নির্ভরশীল করবেন না। সবসময় বিকল্প নেতৃত্ব প্রস্তুত রাখুন। প্রথমদিকের নেতৃত্বে ওপর ঝামেলা হলেও তাহলে আন্দোলন স্তিমিত হবে না। নেতৃত্বে নতুন চেহারা আনার চেষ্টা করুন।
৩. ‘ইন্টার্নালি’ (অভ্যন্তরীণভাবে) সংগঠিত থাকুন কিন্তু আন্দোলনকে কোনো সাংগঠনিক রূপ দেবেন না। কমিটিটা শুধু শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য। আন্দোলনের স্বতঃস্ফূর্ত চরিত্র যাতে বজায় থাকে। তবে কোনো পক্ষ অনুপ্রবেশ করে যাতে স্যাবোটাজ করতে না পারে, এ বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। আন্দোলন সব সময় শান্তিপূর্ণ ও অহিংস হবে।
৪. যে স্থানে কর্মসূচি পালন করবেন, সেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যোগাযোগ করতে চাইলে তাদের সঙ্গে কো-অপারেট (সহযোগিতা) করুন। কিন্তু সকল সিদ্ধান্ত আপনারাই নেবেন। কোনো ধরনের আপস করা যাবে না।
৫. সম্মিলিতভাবে আন্দোলন করার চেষ্টা করুন। জেলা বা মহানগরের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে সমন্বয় তৈরি করুন এবং একসাথে বড় জমায়েত করার চেষ্টা করুন।
৬. কারো ওপর কোনো আঘাত বা হুমকি আসলে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করুন। ভয় পাবেন না। পিছিয়ে যাবেন না। সামনে এসে কথা বলুন। এখানে গোপনীয়তার কিছু নেই। আমাদের দাবি ও বক্তব্য সুস্পষ্ট ও যৌক্তিক।
৭. বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনকে যুক্ত করুন। কর্মসূচিতে সাংস্কৃতিক আয়োজন রাখুন। জেলা ও মহানগরের নাগরিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করুন। কর্মসূচির আগে মাইকিং ও লিফলেটের মাধ্যমে ব্যাপক গণসংযোগ করুন। হলের রুমে রুমে, লাইব্রেরিতে প্রচার করুন।
৮. মিডিয়া ও সংবাদকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখুন। মিডিয়ার সামনে বুঝে-শুনে কথা বলুন, যাতে মূল বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ থাকে। প্রোগ্রামে ও মিডিয়ায় আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, এ রকম বক্তব্য বা স্লোগান দেবেন না।
৯. ঢাকার সঙ্গে সমন্বয় করে কর্মসূচি রাখার চেষ্টা করুন। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানার যারা ব্যবহার করবেন, তারা অবশ্যই ঢাকার সঙ্গে আলোচনা করে নেবেন।
১০. অর্থ সংগ্রহের জন্য সরাসরি ‘ক্রাউড ফান্ডিং’ করুন। কোনো অনলাইন মিডিয়াম ব্যবহার করবেন না। অর্থের নিয়মিত হিসাব রাখুন এবং সমন্বয়ক টিমের কাছে হিসাব ক্লিয়ার (পরিষ্কার) রাখুন। কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ নেবেন না। কারো কাছ থেকে বেশি অংকের টাকা নেবেন না। রাজনৈতিক স্বার্থ আছে, এরকম কারো কাছ থেকে কোনো আর্থিক সহযোগিতা নেবেন না।
চাটগাঁ নিউজ/এআইকে