চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রাম মহানগরীর আকবরশাহ থানার পশ্চিম ফিরোজ শাহ এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় চিকিৎসক কোরবান আলী হত্যা মামলায় আসামি চবি’র সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রসুল নিশান ও আরিফুল্লাহ রাজুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে তার অনুসারী প্রায় ৫০-৬০ জন কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যদের নিয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করতে গেলে আদালত শুনানি শেষে তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরনের আদেশ দেন
এ মামলার বাকি আসামিরা হলেন, মাহির সামি, আকিব, বগা সোহেল, ফয়জুল আকবর চৌধুরী আদর, প্রিন্স বাবু, আরিফুল্লাহ রাজু, অপূর্ব, সাগর, রিয়াদ, সংগ্রাম ও শাফায়েত।
এদিকে শুনানি শেষে আদালত কক্ষ থেকে আসামি নিশানকে বের করে নিয়ে যাওয়ার সময় তার অনুসারী কিশোর গ্যাংয়ের প্রায় ৬০ জন সদস্য সেখানে পুনরায় ভিড় করে গণমাধ্যমকর্মীদের কাজে বাধা দেয় তারা। সাংবাদিকরা ছবি ও ভিডিওচিত্র ধারণ করতে গেলে তাদের হুমকি দেয়।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এএইচএম জিয়া উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে আজ আসামি গোলাম রসুল নিশান ও আরিফুল্লাহ রাজু আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন। আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’
‘গোলাম রসুল নিশান মামলার ৭ নম্বর আসামি এবং রাজু ৮ নম্বর আসামি। ঘটনার দিনের একটি ভিডিও ফুটেজ আদালতে জব্দ আছে। সেই ফুটেজে কিন্তু দেখা যায়, ঘটনার সময় নিশান তার বাসা থেকে বের হচ্ছিল। এছাড়া মামলার এজাহারে কোথাও ৮ নম্বর আসামি রাজুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়নি। আর এজাহারে বলা হয়েছে, নিশানের নেতৃত্বে কিন্তু ঘটনাস্থলে নিশান ছিলেনই না’ বলেন এই আইনজীবী।
এদিকে, শুনানি শেষে গোলাম রসুল নিশানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত অর্ধশতাধিক কিশোর গ্যাং আদালত কক্ষের বাইরে ভিড় করে। আসামির স্থিরচিত্র গ্রহণের সময় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ভিডিওগ্রাফার মো. আলমগীরকে ধাক্কা দিয়ে সিঁড়ি থেকে ফেলে দেয় তারা। এছাড়া হুমকি দেয় প্রথম আলোর আলোকচিত্রী সৌরভ দাশকে। পরে পুলিশ সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ফিরোজশাহ কলোনির ঈদগাঁও মাঠ সংলগ্ন এলাকায় গত ৫ এপ্রিল কিশোর গ্যাংয়ের হামলার মুখে পড়েছিলেন দন্ত চিকিৎসক কোরবান আলীর ছেলে আলী রেজা। ছেলেকে মারধর করতে দেখে বাঁচাতে গিয়ে নিজেও হামলার শিকার হন কোরবান আলী। আহত কোরবান আলীকে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে মেডিকেল সেন্টার নামে নগরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গত ১০ এপ্রিল সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনার পর আলী রেজা রানা বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে আকবর শাহ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। শুরুতে নিশানের খোঁজ পায়নি পুলিশ। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেয় নিশান।
চিকিৎসক কোরবানের ছেলে রেজা বলেন, ‘হামলাকারীরা স্থানীয় গোলাম রসুল নিশানের অনুসারী। যিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটকের পর দুই স্কুল শিক্ষার্থীকে রক্ষা করেছিল। এজন্য ওইদিন রাতেই গোলাম রসুল নিশান তাদের বাসায় গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছিলেন। এর প্রতিশোধ নিতে দুই মাস পর আলী রেজার ওপর হামলা চালায় বখাটেরা।’
চাটগাঁ নিউজ/এসআইএস