এক চিকিৎসক দিয়েই চলছে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স!

আমিনুল ইসলাম খন্দকার : বান্দরবানে ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। সাথে নতুন করে যুক্ত হয়েছে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযান। যেকোন সময় হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক। মাত্র একজনই চিকিৎসক দিয়েই চলছে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন বহির্বিভাগে সেবা নিচ্ছেন প্রায় ৬০-৬৫ জন রোগী। নিয়মিত ১০-১৫ জন রোগী ভর্তি থাকছে হাসপাতালটিতে। ডা. মোহাম্মদ মোস্তফা রুবেল নামের ওই এক কর্মকর্তাকে রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, একা সেবা দিতে গিয়ে তিনি নিজেও শারীরিক এবং মানসিকভাবে ক্লান্ত।

জানা গেছে, উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস করেন। প্রত্যন্ত এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আরও অধিকতর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে ১০ শয্যাবিশিষ্ট রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করে সরকার। নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট, প্যাথলজি, এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, ওষুধসহ কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দুর্গম পাহাড়ের বাসিন্দারা।

এই উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র মিলিয়ে ৭ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। যার মধ্যে শূন্য পদ রয়েছে দুটি। কিন্তু বাকি পাঁচটি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র একজন চিকিৎসক। বাকি চার চিকিৎসক সুবিধাজনক জায়গায় প্রেষণে কাজ করছেন।

সর্বশেষ প্রেষণে যাওয়া রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. গুনিজন চৌধুরির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ৪ বছর যাবৎ পার্বত্য এলাকায় কাজ করেছি। তার মধ্যে ২ বছর রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ছিলাম। দূর্গম এলাকা হওয়ায় এই কর্মস্থল ও এলাকায় প্রতি আমার অনেক টান আছে। তাই মাসখানেক আগে আমার ট্রেনিং পোস্টের কারণে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে যোগদান করার কথা থাকলেও,ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধে যাওয়া হয়নি। তবে আজ রিলিজ নিতে হলো।

তিনি আরও বলেন, আমি রিলিজ নিয়ে চলে আসার সময় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলেছি দূর্গম এলাকা হিসেবে হাসপাতালটিতে অন্তত ৩ জন চিকিৎসক নিয়মিত রাখার বিষয়ে কথা বলেছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মোস্তফা রুবেল বলেন, আমি চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখবেন। এই বিষয়ে তিনি আর বিস্তারিত কিছু মন্তব্য করতে রাজী হন নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুল্লাহ আল হাসান বলেন, ৪ জন ডাক্তার প্রেষণে আছেন। আরও একজন চলে যাচ্ছেন। সর্বশেষ একজন চিকিৎসক আছেন। আমি সিভিল সার্জনকে জানিয়েছি বিষয়টি। তবে আরেকজন ডাক্তার বান্দরবান সদর হাসপাতালে সংযুক্ত ছিলেন, ২/৩ দিনের মধ্যেই তাকে সেখানে থেকে সংযুক্তি বাদ দিয়ে রুমা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফেরত আনা হবে। তবে ৫ জন চিকিৎসক সবসময় থাকলে রোগী সেবায় সমস্যা হবে না।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top