বান্দরবান ও রাঙামাটি প্রতিনিধি: পর্যটকদের জন্য অবশেষে উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের পর্যটন স্পট। ১ নভেম্বর থেকে রাঙামাটিতে পর্যটকরা নির্দ্বিধায় যেতে পারলেও বান্দরবান যেতে আরও সপ্তাহখানেক সময় লাগতে পারে বলে জানান বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে পর্যটন সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন এ তথ্য জানান। উক্ত সময়ে একই বিষয়ে অন্য একটি মতবিনিময় সভায় রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান ১ নভেম্বর থেকে রাঙামাটিতে পর্যটক ভ্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এসময় বান্দরবানের জেলা প্রশাসক বলেন, বান্দরবানের পর্যটন শিল্পের সঙ্গে এই জেলার মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড জড়িত, কিন্তু পর্যটকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করায় বান্দরবানের পর্যটন শিল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই আগামী এক সপ্তাহ পরেই বান্দরবানে পর্যটকদের ভ্রমণে আর কোনো বাধা থাকবে না।
এসময় তিনি আরও বলেন, আমরা স্থানীয় পর্যটন শিল্পে জড়িতদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তাদের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো আলোচনা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবো এবং খুব দ্রুত সময়ে বান্দরবানের ৭টি উপজেলায় পর্যটকরা অনায়াসে ভ্রমণ করতে পারবে।
জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ে বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি ও বান্দরবান সদর পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। পরবর্তীতে পরিস্থিতি অনুযায়ী রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া হবে।
বান্দরবানের এ সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ কাওছার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এম মনজুরুল হক, র্যাব-১৫ এর বান্দরবানের কোম্পানি ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম আজাদ, বান্দরবান সেনা রিজিয়নের মেজর মো. শায়েখউজ জামান, বান্দরবান রেসিডেন্সিয়াল হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিনসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
অপরদিকে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে রাঙ্গামাটিতে পর্যটকদের আগমনের উপর আগামী ১ নভেম্বর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়ার কথা জানান রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান।
এ ঘোষণা শুনেই পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছে রাঙামাটির পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। রাঙ্গামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সসহ বেসরকারী পর্যটন কেন্দ্র গুলো রাঙ্গামাটি ভ্রমন করতে আসা পর্যটকদের আথিতেয়তা দিতে সকল প্রস্তুতি গ্রহন করেছে। তাইতো পাহাড় ঘেরা রাঙ্গামাটির বিশাল কাপ্তাই লেক, আর প্রাকৃতিক ঝর্ণার অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভ্রমন পিপাসুরা নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াতে পারবেন পর্যটন শহর রাঙ্গামাটিতে। তাদের নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকবে পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
প্রসঙ্গত, গত ৬ অক্টোবর অনিবার্য কারণ দেখিয়ে ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটকদের তিন পার্বত্য এলাকা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান ভ্রমণে বিরত থাকার নিদের্শনা দেয় স্ব স্ব জেলার প্রশাসক। আর এই নিদের্শনার পরপরই উক্ত পর্যটন এলাকায় ভ্রমণ সীমিত হয়ে আসে। এতে বিপাকে পড়ে সেখানকার হোটেল-মোটেল-রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা। বন্ধ হয়ে যায় বেশ কিছু পর্যটন নির্ভর প্রতিষ্ঠান, বেকার হয়ে পড়ে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত অসংখ্য মানুষ।
চাটগাঁ নিউজ/আলমগীর/ইলিয়াছ/জেএইচ