উখিয়া প্রতিনিধি: নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে একজোট হয়ে সমাবেশ করেছে উখিয়া ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা। এবার রোহিঙ্গাদের নেতৃত্বে এগিয়ে এসেছে যুবকরা। সমাবেশ থেকে জাতিসংঘের সংস্থাসমূহকে প্রত্যাবাসন ইস্যুতে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলাপ করতে বলা হয়েছে, না হয় একযোগে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। আর রাখাইনে সংঘাতের পরও স্বদেশ ছেড়ে পালিয়ে না আসার আহবান তাদের।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা, দলে দলে উখিয়ার লম্বাশিয়া ক্যাম্পে আসছে রোহিঙ্গারা। সবার গায়ে সাদা শার্ট ও লুঙ্গি পরিহিত। একটি-দুটি ক্যাম্প নয়, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্প থেকে আসে রোহিঙ্গাদের হেড মাঝি, সাব মাঝি, ধর্মীয় নেতা ও নারীরা। যাদের মধ্যে বেশি ভাগই হচ্ছে রোহিঙ্গা তরুণ-তরুণী।
নিরাপত্তার স্বার্থে সমাবেশস্থলের প্রবেশদ্বারে অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তারপর কার্ড দেখে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করতে অনুমতি দিচ্ছে রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবকরা।
সকাল ৯টা না হতেই পুরো সমাবেশস্থল কানায় কানায় পূর্ণ। রোহিঙ্গারা বলছেন, অনেক হয়েছে আর নয়, এবার স্বদেশ মিয়ানমারে ফিরতে চান।
ক্যাম্প ১৩ এর বাসিন্দা ছলিম উল্লাহ বলেন, আমাদের দেশ আছে। মিয়ানমারের আরকান আমাদের দেশ। আমরা দেশে ফিরে যেতে চাই।
সমাবেশে আসা ক্যাম্প ২৬ এর বাসিন্দা মো. হাবিব বলেন, এক বছর-দুই বছর করে ৭ বছর পার করছি পরদেশে। এখানে আর থাকতে চাই না, নিজেদের অধিকার নিয়ে স্বদেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাই।
সমাবেশে বক্তব্যের মাঝে মাঝে দেয়া হয় স্লোগান। সব রোহিঙ্গা হাত উঁচিয়ে বলে উঠে বাড়ি যাবো, বাড়ি যাবো। আর সমাবেশস্থলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করে রাখাইনে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য। আহ্বান জানান, নির্যাতনের পরও যেন স্বদেশের মাটি না ছাড়ে।
রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরওএফডিএমএনআরসি’র প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ উল্লাহ বলেন, মিয়ানমারের আরকানে আমাদের যারা আত্মীয়-স্বজন, মা-বাবা ও ভাই-বোন আছে। তাদের ওপর অনেক নির্যাতন হচ্ছে। তাদের প্রতি আহ্বান থাকবে, তারা যেন কোনদিনও দেশ ছেড়ে চলে না আসে।
আর সমাবেশ থেকে জাতিসংঘের সংস্থাসমূহকে প্রত্যাবাসন ইস্যুতে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলাপ করে উদ্যোগ গ্রহণ না করলে একযোগে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরওএফডিএমএনআরসি’র প্রতিষ্ঠাতা মো. কামাল হোসাইন বলেন, ‘সমাবেশে মা-বাবা, ভাই-বোন যারা এসেছেন, তাদের অধিকার যদি যুবকরা কাঁধে নেয়, তাহলে ১ বছরের মধ্যে ইনশাআল্লাহ আমাদের দেশে আমরা ফিরে যেতে পারব।’
৩ ঘণ্টার সমাবেশ শেষে মোনাজাতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের প্রতি শুকরিয়া জানায় রোহিঙ্গারা।
চাটগাঁ নিউজ/এমআর