চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: পুঁজি ছোট হলেও নিউজিল্যান্ড ব্যাটারদের চাপে রেখেছিল বাংলাদেশের বোলাররা। ৬৯ রানের মধ্যে তুলে নিয়েছিলেন সফরকারীদের ৬ উইকেট। জয়ের আশা জাগিয়েই চা-বিরতিতে গিয়েছিল টাইগাররা। তবে বিরতির পর চাপ ধরে রাখতে পারেননি স্বাগতিকরা। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং করে নিউজিল্যান্ডকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান গ্লেন ফিলিপস ও মিচেল স্যান্টনার। ১৩৯ রান তাড়ায় ৪ উইকেটে জিতেছে নিউজিল্যান্ড। ফিলিপস ৪৮ বলে এক ছক্কা ও চারটি চারে করেন ৪০ রান। তার সঙ্গে ৭৭ বলে ৭০ রানের জুটি উপহার দেওয়া স্যান্টনার ৩৯ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় করেন ৩৫ রান। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ জেতায় ও দ্বিতীয় ম্যাচ হারায় ১-১ এ ড্র হয়েছে দুই ম্যাচের এই সিরিজ।
১৩৭ রানের পুঁজি নিয়ে বোলিং করতে নেমে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। পঞ্চম ওভারে ওপেনার ডেভন কনওয়েকে(২) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন পেসার শরিফুল ইসলাম। এরপর দলীয় ২৪ রানে তাইজুলের ঘূর্ণিতে ফেরেন কেন উইলিয়ামসন। ২৪ বলে ১১ রান করেন তিনি। ৩৩ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন হেনরি নিকোলস। ১০ বল খেলে ৩ রান করেন তিনি। ৩৩ রানেই ৩ উইকেট হারানোর পর আগ্রাসী ব্যাটিং করছিলেন টম ল্যাথাম। দলীয় ৪৮ রানের মাথায় তাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি এনে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৩ চারে ২৬ রান আসে ল্যাথামের ব্যাট থেকে।
দলীয় ৫১ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। তাইজুলের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন টম ব্লান্ডেল(২)। পাঁচ নম্বরে নামা ড্যারেল মিচেল ক্রমেই উইকেটে থিতু হচ্ছিলেন। ১৯ রান করা সেই মিচেলকে মিরাজ ফিরিয়ে দিলে আরও বিপদে পরে নিউজিল্যান্ড। তবে ৭ম উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন গ্লেন ফিলিপস ও মিচেল স্যান্টনার। ফিলিপসের সঙ্গে মিচেলের জুটিই তাদেরকে ম্যাচ জিতিয়ে দেয়। বাংলাদেশের পক্ষে মেহেদী হাসান মিরাজ তিনটি, তাইজুল ইসলাম দুটি ও শরিফুল ইসলাম একটি উইকেট শিকার করেন।
এর আগে চতুর্থ দিন ব্যাটিং বিপর্যয়ে প্রথম সেশনও শেষ করতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ২ উইকেটে ৩৮ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করা বাংলাদেশ দল দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ১৪৪ রানে। ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে ফিফটি পেয়েছেন কেবল জাকির হাসান। ৮৬ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৫৯ রান করেন জাকির। নিউজিল্যান্ডের এজাজ প্যাটেল নিয়েছেন ৬ উইকেট। এর আগে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে করেছে ১৪৪। নিউজিল্যান্ড নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৮০ রান করে।
অথচ মুমিনুল-জাকিরের জুটিতে দিনের শুরুটা ভালোই ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু দলীয় ৭১ রানে মুমিনুলের বিদায়ের পর থেকেই শুরু ছন্দপতন। এজাজ প্যাটেলের বলে এলবির শিকার হয়ে মুমিনুল আউট হয়েছেন ১০ রান করে। এরপর একে একে উইকেট বিলিয়ে দেন মুশফিকুর রহিম, শাহাদাত হোসেন দিপু ও মেহেদী হাসান মিরাজ, নুরুল হাসান সোহান, নাঈম হাসান ও শরিফুল ইসলাম।
মুশফিকুর মাত্র ১২ বল খেলে ৯ রান করে স্যান্টনারের শিকার হন। কিউই এই স্পিনারের দ্বিতীয় শিকার হন শাহাদাত। ১১ বলে ৪ রান করে এলবিডব্লিউ হন এই ডানহাতি। মিরাজও ভরসা দেখাতে পারেননি। মাত্র ৩ রান করে এজাজের বলে ফিরলেন। নুরুল হাসান সোহান তো ব্যর্থতার জাল থেকে বেরই হতে পারছেন না। এদিন রানের খাতাই খুলতে পারেননি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
এক প্রান্তে জাকির লড়াই করলেও যোগ্য সঙ্গী হিসেবে কাউকে পাননি। তার বিদায়ে দলীয় ১২৮ রানে পড়ে বাংলাদেশের নবম উইকেট। তার পর পুঁজিটা আরও বাড়িয়ে নিতে অবদান রাখেন তাইজুল, শরিফুল। শেষ দিকে কিছু বাউন্ডারির কারণে লিড ১৩৭ রানে দাঁড়িয়েছে। ২১ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন তাইজুল। বাংলাদেশের ইনিংসের ভরাডুবি হয়েছে মূলত কিউই স্পিনার এজাজ প্যাটেলের কারণে। ৫৭ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ৫১ রানে তিনটি নিয়েছেন মিচেল স্যান্টনার। একটি শিকার টিম সাউদির।