চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের নেতারা বলেছেন, গণপরিবহনের মালিক ও শ্রমিকেরা দেশের আইনের শাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বারবার জনগণকে জিম্মি করছেন। বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে মানুষ হত্যা করার প্রতিবাদ মানুষ করছে। আর এতেই ধর্মঘটের নামে মানুষকে জিম্মি করা হচ্ছে। এটি বর্বরতা।
বিভিন্ন দাবিতে চট্টগ্রামে চলা ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে রোববার (২৮ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, গণপরিবহনের মালিক ও শ্রমিকদের সরকারের পক্ষ থেকে নানাভাবে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে তাঁরা এ ধরনের অবৈধ ধর্মঘট পালন করছে। সরকারও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ ছাড়া সড়ক পরিবহন খাতে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরাই নীতি প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আর খেসারত দিচ্ছে জনগণ।
বিবৃতিতে নেতারা আরও বলেন, সড়ক পরিবহন খাতে যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের বেলায় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরাই মিলে তাদের মতো করে যাবতীয় নীতি প্রণয়ন ও সবগুলি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে। বিএরআরটিএ ও ট্রাফিক পুলিশের কাছে কোন অভিযোগ করে প্রতিকার পাওয়া কঠিন। কারণ, সবকিছুর ওপর পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরাই সবকিছুর ওপর রাজত্ব করছে। সড়ক পরিবহন খাতে নৈরাজ্য থামাতে হলে ভোক্তা ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সম অংশগ্রহণ নিশ্চিত জরুরি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, প্রতিনিয়ত সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে। মূল্যবান জীবন হারিয়ে যাচ্ছে। লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালকেরা গাড়ি চালান। অনেক যানবাহনের ফিটনেস থাকে না। তবু সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু এসব বন্ধ হচ্ছে না। সরকারি সংস্থাগুলো সড়কের এ নৈরাজ্য বন্ধ করতে পারছে না।
চট্টগ্রামসহ পাঁচটি জেলায় রোববার সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। চট্টগ্রাম নগর থেকে বিভিন্ন উপজেলা, কক্সবাজার জেলা, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলার উদ্দেশে কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। ওই সব এলাকা থেকে কোনো বাসও আসছে না। জেলার শহর এলাকায়ও চলছে না গণপরিবহন। খোলার দিনের সকালে কর্মক্ষেত্রে যেতে হাজারো মানুষকে বেগ পেতে হয়েছে।
মূলত চারটি দাবিতে এ ধর্মঘট পালন করছেন গণপরিবহনের মালিক ও শ্রমিকেরা। গণপরিবহন মালিক ও শ্রমিকের বিরুদ্ধে দেওয়া মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তার মালিক-শ্রমিকের মুক্তি, সড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করা, বিভিন্ন জায়গায় বাস আটকে রাখার প্রতিবাদ ও চুয়েটে পুড়িয়ে দেওয়া তিনটি বাসের ক্ষতিপূরণের দাবিতে ধর্মঘট চলছে। গতকাল শনিবার মালিক ও শ্রমিকের যৌথ সভায় এসব দাবি তুলে ধরা হয়।
বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, মো. সেলিম জাহাঙ্গীর ও ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ আবদুল মান্নান এসব মন্তব্য করেন।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ