‘আইনজীবী হত্যাকাণ্ড’— পরিচয় মিলল জড়িত ৭ জনের

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রামের আদালতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যায় সরাসরি জড়িত ১৫ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭ জনের নাম পরিচয় পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে দুইজন নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এই সাতজনকে গ্রেফতারও করেছে যৌথবাহিনী।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতভর অভিযান চালিয়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ভিডিও ও ছবি বিশ্লেষণ করে হত্যার সঙ্গে জড়িত সাতজনের পরিচয় বের করেছে গোয়েন্দারা।

জড়িত সাতজন হলেন- বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির এলএলবির ৩৬তম ব্যাচের চতুর্থ সেমিস্টারের ছাত্র শুভ কান্তি দাস। চট্টগ্রামের মেথরপট্টি এলাকার বাসিন্দা সুমন নন্দী, হাজারীগলি এলাকার মৃত মনোরঞ্জন দে’র ছেলে বিকাশ দে (৪০), কোতোয়ালির জলসা মার্কেট এলাকার মৃত সুধীর চক্রবর্তীর ছেলে নারায়ণ চক্রবর্তী (৫০) ও বন্দরের নিমতলা এলাকার মানিক দে’র ছেলে মন্টু দে।

এছাড়া দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাহেরের অনুসারী ও শিপিং কোম্পানি চাকরি করা রাজিব ভট্টাচার্য, চট্টগ্রাম বাকলিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি জিয়া উদ্দিন ফাহিম। এরই মধ্যে তাদের আসামি করে চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি ও পোস্টমর্টেম অংশ নেওয়া একাধিক ব্যক্তির বরাতে জানা যায়, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের পিঠে ও ঘাড়ে দুটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এছাড়া ভারী বস্তুর আঘাতে তার মাথার খুলি ও একটি পা ভেঙে গেছে।

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যায় ইসকন সমর্থকদের জড়িত থাকার অভিযোগ এনে সংগঠনটি নিষিদ্ধের দাবিতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করেছে ছাত্র-জনতা। বুধবার (২৬ নভেম্বর) নগরের টাইগারপাস, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, আন্দরকিল্লাহসহ বিভিন্ন স্থানে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এর বাইরে সাইফুলের নিজ এলাকা লোহাগাড়াতেও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে । লোহাগড়ার সংগ্রামী মুসলিম জনতার ব্যানারে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

বিক্ষোভ-সমাবেশে অংশ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ইসকনরা জঙ্গি, যারা গত ১৬ বছর ধরে ছিল স্বৈরাচারদের সঙ্গী। আওয়ামী লীগের সহায়তায় ইসকন ১৬ বছর পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে জঙ্গি সংগঠনে রূপ নিয়েছে। স্বৈরাচারের সঙ্গী হয়ে ভারতের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশে অশান্তি করছে ইসকন।

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, যে রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা এ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, নতুন বাংলাদেশ এসেছে, সে রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে চিম্ময়-খুনি হাসিনারা উসকানি দেয়। আমরা স্পষ্ট করে সব প্রেতাত্মাদের বলে দিতে চাই, খুনি হাসিনাকে দেশ ছাড়া করেছি, জঙ্গি ইসকনকেও দেশছাড়া করা হবে।

এদিকে, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকারীদের গ্রেফতারদের দাবিতে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। নগরীর বহদ্দারহাট থেকে শুরু করে বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে। এ সময় ছাত্রশিবির নেতারা ইসকনকে জঙ্গি সংগঠন অ্যাখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধের দাবি জানান।

এছাড়া আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের গায়েবানা জানাজাসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত উগ্রবাদী ইসকন সদস্যদের গ্রেফতার, তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ও আইআইইউসিসহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ/এসএ

Scroll to Top