সিপ্লাস ডেস্ক: নোয়াখালীতে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতার (১৪) চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় তার গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনির (৩০) বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহিমের আদালত তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন। এ সময় মামলার একমাত্র আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মামুনুর রশীদ লাভলু জানান, স্কুলছাত্রী অদিতা হত্যা মামলার একমাত্র অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক রনির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। ২ জুলাই মামলার প্রধান সাক্ষী ও মামলার বাদী নিহত অদিতার মায়ের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য তারিখ ধার্য করা হয়।
আসামিপক্ষ এ মামলা থেকে আসামির অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন।
আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের সাত মাসের মাথায় সোমবার দুপুর ২টায় কোর্ট পরিদর্শক মো. শাহাআলমের মাধ্যমে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুধারাম থানার এসআই চৌধুরী প্রমোজ।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর নোয়াখালী পৌর এলাকার লক্ষ্মীনারায়ণপুরে নিজ বাসায় খুন হন নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতা। ওই রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাহান মঞ্জিলের একটি কক্ষ থেকে অর্ধনগ্ন, গলা ও দুই হাতের রগ কাটা অবস্থায় বিছানায় পড়ে থাকা অদিতার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে পুলিশ তাৎক্ষণিক অদিতার গৃহশিক্ষক আব্দুর রহিম রনিসহ তিনজনকে আটক করে। এ ঘটনায় নিহত অদিতার মা রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর সুধারাম মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে ২৪ সেপ্টেম্বর হত্যার দায় স্বীকার করে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জুডিশিয়াল সিনিয়র বিচারক মো. এমদাদ হোসেনের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন রনি।
জবানবন্দিতে রনি জানান, ২২ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টার সময় রনি অদিতার বাসায় যায়। এরপর গল্পের একপর্যায়ে অদিতাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। তখন আদিতা রনির ঘাড় ও গলায় আঁচড় দেয়। এরপর রনি ওড়না দিয়ে অদিতার হাত বেঁধে ধর্ষণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এ সময় অদিতা ঘটনা সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার হুমকি দিলে রনি তাকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করে। ঘটনার মোড় ঘোরাতে রনি আদিতাদের ঘরে থাকা ছুরি দিয়ে অদিতার হাত ও গলা কেটে দেয়। একই সঙ্গে ঘরে আলমারিতে থাকা মালামাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রেখে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে।