চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: ইতেকাফ শব্দের অর্থ হচ্ছে- অবস্থান করা, স্থির থাকা, আবদ্ধ থাকা। শরিয়তের পরিভাষায় ইতেকাফ বলা হয়- রমজানের শেষ ১০ দিন বা যে কোনো দিন দুনিয়াবি সব কাজ-কর্ম তথা পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মসজিদে বা ঘরের পবিত্র স্থানে ইতেকাফের নিয়তে অবস্থান করা।
২০ রমজান সূর্যাস্তের সময় থেকে মসজিদে ইতেকাফ শুরু করতে হবে। রমজানের চাঁদ দেখার পর মসজিদ থেকে বের হবে। রোজায় মহল্লার জামে মসজিদে ইতেকাফ করা ‘সুন্নতে মুয়াককাদা আলাল কিফায়া’। সুন্নতে মুয়াককাদা আলাল কিফায়া মানে হলো- সবার পক্ষ থেকে কাউকে আদায় করতে হবে। তা না হলে পুরো এলাকাবাসী গুনাহগার হবে।
এতেকাফের ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (স) এরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি রোজার শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করবে, ওই ব্যক্তি দুটি হজ ও দুটি ওমরাহর সমপরিমাণ সওয়াব পাবে।
হজরত আয়েশা (রা) বলেন, রাসুল (স) যতদিন জীবিত ছিলেন, ততদিন রমজানের শেষ ১০ দিন মসজিদে ইতেকাফ করেছেন। জীবিত থাকাকালে কোনো রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ বাদ দেননি (বুখারি)। মহানবী (স) এরশাদ করেন- আমি লাইলাতুল কদরের সৌভাগ্য ও মহিমা অনুসন্ধানে প্রথম দশদিন ও মাঝের দশদিন ইতেকাফ করেছি। অবশেষে আমার কাছে এক ফেরেশতা এসে বলেছেন, লাইলাতুল কদর শেষ দশকে। কাজেই তোমাদের মধ্যে যারা ইতেকাফ করতে চায়, তারা যেন শেষ দশকে ইতেকাফ করে (মুসলিম)।
ইতেকাফকালে অধিকহারে কোরআন তেলাওয়াত, নফল নামাজ, তাসবিহ, জিকির, দোয়া-দরুদ, দান-সদকা ইত্যাদি আমল করা চাই। কারও সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ ও অনর্থক গল্প-গুজবে সময় নষ্ট করা উচিত নয়। লেনদেন না করার পাশপাশি বিনা প্রয়োজনে মসজিদ থেকে বের হওয়াও উচিত নয়।
ইতেকাফ তিন প্রকার- ওয়াজিব, মুস্তাহাব, সুন্নাতে মুয়াককাদাহ। মান্নতের ইতেকাফ ওয়াজিব। রমজানের শেষ দশদিন ছাড়া যত ইতেকাফ করা হবে তা মুস্তাহাব। রমজানের শেষ দশ দিনে ইতেকাফ করা সুন্নাতে মুয়াককাদা কেফায়া। মসজিদুল হারামে ইতেকাফ করলে তা সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ইতেকাফ। তার পর মসজিদে নববীতে এবং তার পর বায়তুল মাকদাসে। তার পর উৎকৃষ্ট ইতেকাফ হলো কোনো জামে মসজিদে করা। এর পর মহল্লার মসজিদে।
ইতেকাফের চারটি শর্ত- ১. মসজিদে অবস্থান করা, নারীদের জন্য ঘরে; ২. নিয়ত করা, ৩. বড় নাপাক থেকে পাক হওয়া, ৪. রোজা অবস্থায় হওয়া।
চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন