কক্সবাজার প্রতিনিধি: টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি আসতে পারে ১১ জানুয়ারি। বুধবার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আন্তমন্ত্রণালয় সভা ডেকেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
সভায় জাহাজ চলাচলের অনুমতি না মিললে আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়েছেন ট্যুর অপারেটস এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার সহ ১০টি সংগঠন।
মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ হুশিয়ারি দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, নাব্যতার সংকটের অযুহাত দেখিয়ে চলতি পর্যটন মৌসুমের শুরু থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে পর্যটকবাহি জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয়নি। এতে করে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে জাহাজ চলাচল না করার ফলে কক্সবাজার তথা সেন্টমার্টিন ভ্রমন সেবা প্রদান করা ৫ লক্ষ মানুষের জীবিকা এখন হুমকীর সম্মুখীন। অথচ প্রতিবছর পর্যটন মৌসুমে যত সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে ভ্রমণ করে তার অধিকাংশ পর্যটকই সেন্টমার্টিন ভ্রমণের ইচ্ছা পোষণ করে থাকে। যেহেতু সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ যা মূল ভূখন্ড হতে ১৫ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থিত। সমূদ্র পথে যাতায়াত করা সহজসাধ্য নয় বিধায় প্রতিবছর নভেম্বর হতে মার্চ পর্যন্ত পর্যটন মৌসুমে সমুদ্র শান্ত থাকায় পর্যটকগণ সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে পারে। আর এই পর্যটকদের ভ্রমণসেবা প্রদান করে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, ট্যুর অপারেটস এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার সভাপতি আনোয়ার কামাল, সাধারণ সম্পাদক একেএম মনিবুর রহমান টিটু, কলাতলীত মেরিন ড্রাইভ হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুখিম খান, কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ, সেন্টমার্টিন হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রহিম, জেলা হোটেল রেস্তোরা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিম, এসএম আবু নোমান সহ অনেকে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বেশ কয়েক বছর ধরে সেন্টমার্টিন নিয়ে নানা প্রকারের অপপ্রচার করা হচ্ছে। একশ্রেণীর সুবিধাভোগী চক্র পরিবেশের কথা বলে পর্যটন শিল্পে বাঁধা সৃষ্টি করছে। অথচ, ২০১৯ সালে নভেম্বর হতে মার্চ পর্যন্ত ১,৬০,৫০০ জন পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমন করছে। অর্থাৎ ১৫১ দিন পর্যটন মৌসুমে প্রতিদিন গড়ে ১,০৬৩ জন মানুষ সেন্টমার্টিন ভ্রমন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জাহাজ চলাচলের যুক্তি দেখিয়ে বলা হয়, চলতি পর্যটন মৌসুমের শুরু হতে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে পর্যটন পরিবহন জাহাজ বন্ধ আছে। কিন্তু মিয়ানমারের মালামাল পরিবহন অব্যাহত আছে। যদি নব্যতার সংকট থাকতো তাহলে মিয়ানমারের জাহাজ মালামাল নিয়ে কিভাবে আসে। বর্তমানে ২টি জাহাজ টেকনাফের দমদমিয়া ঘাটে অবস্থান করছে। যা গত ৩/৪ দিন পূর্বে সেন্টমার্টিন হতে এই রুটেই ভাটার মধ্যেই দমদমিয়া জেটিতে এসেছে। নব্যতার সংকট থাকলে তা হতো না। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে জাহাজ চলাচল না করার ফলে ট্যুর অপারেটরদের পাশাপাশি ট্যুর গাইড, হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউজ, রেস্টহাউজ, ফ্ল্যাট ও কটেজ ব্যবসায়ী- কর্মচারী, বাস-মিনিবাস ব্যবসায়ী-কর্মচারী, রেস্টুরেন্ট ও ফুড প্রসেসিং ব্যবসায়ী-কর্মচারী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, ভ্যান- রিক্সা-টমটম চালক এবং বিভিন্ন প্রকারের কুটির শিল্প ব্যবসায়ীসহ কক্সবাজার তথা সেন্টমার্টিন ভ্রমন সেবা প্রদান করা ৫ লক্ষ মানুষের জীবিকা এখন হুমকীর সম্মুখীন। আমরা আমাদের জীবিকা ঠিক রাখার স্বার্থে এই নৌ-রুটে জাহাজ চলাচল চালু করার দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার, সী-ক্রুজ অপারেটন অনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, কলাতলী মেরিন প্রাইড হোটেল রিসেটি মালিক সমিতি, সেন্টমাটিন আবাসিক হোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতি, সেন্টমাটিন বোট মালিক সমিতি ট্যুর গাইড এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার, হোটেল-মোটেল গেষ্টহাউজ মালিক সমিতি, কক্সবাজার বাংলাদেশ রেস্তোরা মালিক সমিতি, কক্সবাজার জেলা কক্সবাজার বাস-মিনিবাস মালিক গ্রুপ সেন্টমার্টিন রোস্তোরা মালিক সমিতি, সেন্টমাটিন বাজার মালিক সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।